বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য উচ্চশিক্ষার অন্যতম জনপ্রিয় স্থান যুক্তরাজ্য বা United Kingdom। উচ্চশিক্ষার জন্য রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও পারিবারিক সিদ্ধান্তে বিলেতে পড়াশোনার জন্য আসেন। যদিও তিনি জাহাজে চড়ে বিলেতের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছিলেন।
বিশ্বের প্রায় ২০৫টি দেশ থেকে প্রতিবছর লক্ষাধিক শিক্ষার্থী যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান উচ্চশিক্ষা গ্রহণের জন্য। প্রায় ১৩০ টিরও বেশি নিবন্ধিত উচ্চশিক্ষা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান রয়েছে দেশটিতে।
বিশ্বমানের সুযোগ-সুবিধাসহ কর্মস্থান আর উন্নত ভবিষ্যতের জন্য বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের পছন্দ তালিকার শীর্ষে যুক্তরাজ্য।শিল্প, সংস্কৃতি, সাহিত্যে, বর্ণময় ইতিহাসে, ব্যতিক্রমী প্রাকৃতিক সৌন্দর্যেরসঙ্গে শতাব্দীসম প্রাচীন ঐতিহ্যের ওপর নির্মিত এবং শিক্ষার প্রতি বিশেষ দৃষ্টিভঙ্গিই যুক্তরাজ্যে অবস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে আন্তর্জাতিক শীর্ষ স্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভেতরে জায়গা করে দিয়েছে।
উচ্চশিক্ষার জন্য কেন যুক্তরাজ্যকে বেছে নেবেন?
● র্যাঙ্কিংয়ের প্রথম দিকে অবস্থিত যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়।
● যুক্তরাজ্যের (UK) শিক্ষাব্যবস্থা বাস্তবমুখী, এ শিক্ষাব্যবস্থার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা নিজেদের যোগ্যভাবে গড়ে তুলতে পারেন তার ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ারের জন্য।
● পড়ালেখার পাশাপাশি পার্টটাইম চাকরি করার সুযোগ। দীর্ঘ ছুটিতে ফুল ও পার্টটাইম জবের ব্যবস্থা।
● ফুল-ফ্রি স্কলারশিপ আছে ।
শিক্ষা, গবেষণায়, প্রকৌশল, চিকিৎসায় যুক্তরাজ্যের সেরা বিশ্ববিদ্যালয় –
● University College London (UCL)
● London School of Economics and Political Science
● King’s College London
● The University of Manchester
●University of Warwick
● University of Glasgow
●The University of Edinburgh
বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস-
● একাডেমিক পেপারস।
● পাসপোর্ট।
● ছবি।
● ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজ প্রফিসিয়েন্সি (একেক বিশ্ববিদ্যালয়ে একেক রকমের ন্যূনতম যোগ্যতা প্রয়োজন)
● ব্যাংক স্টেটমেন্ট
● আর্থিক সচ্ছলতার প্রমাণপত্র
● মেডিক্যাল টেস্ট (TB test)
যক্ষ্মা পরীক্ষা (Tuberculosis Test )
ব্রিটিশ দূতাবাসের ভিসা বিভাগে 6 মাসের বেশি সময়ের ভিসার জন্য আবেদনকারী আন্তর্জাতিক ছাত্রদের তাদের ভিসা জমা দেওয়ার সময় যক্ষ্মা পরীক্ষার রিপোর্ট প্রদান করতে হবে। একটি বুকের এক্স-রে খরচ £60, যা যক্ষ্মা চিকিত্সার খরচ অন্তর্ভুক্ত করে না। (এটা উল্লেখ্য যে এই যক্ষ্মা পরীক্ষা অবশ্যই দ্বারা জারি করা মনোনীত হাসপাতালে করা উচিত ব্রিটিশ দূতাবাস, অন্যথায় এটি অবৈধ হবে)
● শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে চিঠি (Unconditional Offer Letter)।
যুক্তরাজ্যে পড়াশোনার জন্য শিক্ষার্থীদের ইংরেজি ভাষার প্রফিসিয়েন্সি সার্টিফিকেট অত্যাবশ্যক। এক্ষেত্রে, UK হোম অফিস অনুমোদিত IELTS ফর UKVI বা Academic IELTS, অথবা ইউনিভার্সিটির ইন্টারনাল টেস্ট ও অন্যান্য গ্রহণযোগ্য টেস্টে অংশগ্রহণ করতে হবে। এছাড়া ২০২২-২৩ সেশনের জন্য MOI, OITEC (Online English language Test) Accepted.
উচ্চশিক্ষার জন্য যুক্তরাজ্যে যেতে আগ্রহী বাংলাদেশিদের জন্য বিভিন্ন ধরনের স্কলারশিপ প্রোগ্রাম রয়েছে। এই প্রোগ্রামগুলোর মধ্যে রয়েছে-
● The Commonwealth Scholarships
● The Royal Society Grants
● Scholarships from UK universities
এই স্কলারশিপগুলো শিক্ষার্থীদের পড়াশুনার খরচসহ জীবনযাত্রার সম্পূর্ণ ব্যয় বহন করে থাকে, যেটি বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য অনেক বড় সুযোগ।
যুক্তরাজ্যের যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্র্যাজুয়েটদের উচ্চ বেতনে চাকরির সুযোগ রয়েছে। এ ছাড়াও পড়ালেখার পাশাপাশি রয়েছে পার্ট-টাইম কাজের সুযোগ। অর্থাৎ ছাত্র অবস্থায়ই ভালো মানের আয়ের পথ খোলা। হাজার হাজার বিষয় ও কোর্স থেকে নিজের পছন্দ মতো পড়ার সুযোগ রযেছে। যুক্তরাজ্যে মূলত তিন ধরনের স্টুডেন্ট ভিসা প্রচলিত রয়েছে। এই ধরনের ভিসা থেকে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা নিজের প্রয়োজন মতো ভিসা বাছাই করে আবেদন করতে পারে।
● Tier 4 (General) UK Student Visa : এই ভিসায় আবেদনের জন্য বয়স ১৬’র বেশি হতে হবে।
● আবেদন করতে হবে ক্লাস শুরুর তিন মাস পূর্বে। কোর্স যদি ছয় মাসের কম মেয়াদের, তার জন্য এক সপ্তাহ আগে যুক্তরাজ্যে পৌঁছাতে হবে এবং ছয় মাসের বেশি হলে এক মাস পূর্বে পৌঁছাতে হবে।
● Child Student Visa : ৪–১৭ বছর বয়সের যেকোনো শিক্ষার্থী এই ধরনের ভিসার জন্য আবেদন করতে পারে। সেক্ষেত্রে শিক্ষার্থীকে অবশ্যই যুক্তরাজ্যের যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয় বা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে বৈধ স্পন্সরের মাধ্যমে গৃহীত হতে হবে। আবেদন করার পর তিন মাসের কম মেয়াদি কোর্স হলে এক সপ্তাহ আগে– এবং তিন মাসের বেশি হলে এক মাস আগে যুক্তরাজ্যের পৌঁছাতে হবে।
● Short-term Study Visa : যেকোনো বয়সের শিক্ষার্থী এই ধরনের ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবে। এই ধরনের ভিসার মেয়াদ সর্বোচ্চ এক বছর। ভ্রমণের দিনের ওপর নির্ভর করে পৌঁছালেই হবে।
যুক্তরাজ্য সম্পর্কে কিছু কমন প্রশ্ন-
যুক্তরাজ্যে পড়াশোনার খরচ কেমন?
● যুক্তরাজ্যে (UK) দু’টি মানদণ্ডে টিউশন ফি নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। একটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের শিক্ষার্থীদের জন্য এবং অন্যটি অন্যান্য আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য। তবে সাধারণত শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি ৭,৫০০ পাউন্ড থেকে ৩৭,০০০ পাউন্ড পর্যন্ত হয়ে থাকে। তবে পড়াশোনার পাশাপাশি এখানে মোটা বেতনে খন্ডকালীন চাকরি এবং প্রচুর পরিমাণে বৃত্তির সুবিধা থাকায় শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার খরচাদি অনেকাংশেই কমে আসে।
£1 = 120 taka (TC)*
যুক্তরাজ্যে (UK) জীবনযাপন ব্যয় কেমন?
যুক্তরাজ্যে সাধারণত শহরভেদে জীবনযাপন ব্যয় একেক রকমের হয়ে থাকে। তবে যদি গড় হিসাব করা হয়, তবে একজন আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর প্রতিমাসে জীবনযাপন বাবদ ৬০০ পাউন্ড থেকে ১২০০ পাউন্ড পর্যন্ত প্রয়োজন হতে পারে।
Student living costs in the UK 2022
Expense Cost per month
Rent £400 (shared room)
Groceries £130
Going out £25
Takeaways and eating out £50
Household bills £40
Transport £50
Clothes and shopping £35
Other £20
Course materials £20
Mobile phone £20
Health and wellbeing £20
বিশ্ব বিদ্যালয় ভর্তি এবং ভিসা প্রাপ্তির জন্য কোনো কাগজাদির প্রয়োজন?
● SSC Certificate
● SSC MarkSheet
● HSC Certificate
● HSC MarkSheet
● Undergraduate Certificate
● Undergraduate Mark Sheet
● 2 Recommendation Letter
● IELTS (একেক বিশ্ব বিদ্যালয়ে একেক রকমের ন্যূনতম যোগ্যতা দিয়ে রাখে, তবে কমপক্ষে ৫.৫ লাগে)
● ব্যাংক সলভেন্সি সার্টিফিকেট এবং ব্যাংক স্টেটমেন্ট
● Offer Letter (ভিসার জন্য)
যুক্তরাজ্যে স্কলারশিপ পেতে প্রস্তুতি নেবেন যেভাবে
মানুষ মনে করেন সেগুলো খুবই প্রতিযোগিতাপূর্ণ এবং ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। স্কলারশিপের জন্য আবেদনের ক্ষেত্রে বেশ কিছু বিষয় জড়িত। এ বিষয়ে কিছু নির্দেশিকা আবেদন প্রক্রিয়ার জন্য সহায়ক হতে পারে।
‘ভালো স্টেটমেন্ট অব পার্পাস (এসওপি), ভালো একাডেমিক ব্যাকগ্রাউন্ড এবং আইইএলটিএস স্কোর একটি আবেদনকে আরও বেশি শক্তিশালী করে তোলে।’ ‘এসওপি লেখার ক্ষেত্রে সব সময় সাধারণ কথাবার্তার পরিবর্তে নিজের ধারণা থেকে লিখতে হবে। কোনো সমস্যার সমাধান কীভাবে করেন, সে বিষয়ে বাস্তব জীবনের অভিজ্ঞতাগুলোর উদাহরণ দিন। আপনার লক্ষ্য কী এবং কীভাবে সেটা অর্জন করতে চাচ্ছেন সে বিষয়ে লিখুন।’
যুক্তরাজ্য বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার সুযোগ বা চ্যালেঞ্জগুলো কী কী ?
১. স্নাতকের জন্য কি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আবেদন করা যায়?
স্নাতক পর্যায়ে যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাচেলর ডিগ্রির জন্য আবেদন করা যায়। ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়, কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয়, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়, ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়সহ বৈশ্বিক র্যাংকিংয়ে এগিয়ে থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার পরে সরাসরি স্নাতক পর্যায়ে ভর্তির সুযোগ কম। ফাউন্ডেশন কোর্স করে স্নাতক পর্যায়ের প্রথম বর্ষে ভর্তি হওয়া যায়। এ লেভেল–ও লেভেলে পড়া শিক্ষার্থীরা সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আবেদন করতে পারেন।
২. বৃত্তির সুযোগ কেমন?
স্নাতক পর্যায়ে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃত্তি ও আর্থিক সহযোগিতা, ফেলোশিপের সুযোগ খুবই সীমিত। তিন থেকে পাঁচ হাজার পাউন্ডের বৃত্তির জন্য অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভীষণ প্রতিযোগিতা। তবে স্নাতকোত্তর পর্যায়ে বৃত্তির যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। সরকারিভাবে মাস্টার্স ও পিএইচডির জন্য কমনওয়েলথ স্কলারশিপ ও শুধু মাস্টার্সের জন্য চিভনিং বৃত্তি আছে। অনেক সময় বিভিন্ন গবেষণার ক্ষেত্রে অধ্যাপকরা নিয়মিত পিএইচডির জন্য বৃত্তি দেন।
৩. সরকারি বৃত্তির জন্য কী কী যোগ্যতা লাগে?
কমনওয়েলথ বৃত্তি ও চিভনিং বৃত্তির জন্য স্নাতক পর্যায়ে ফলাফল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পাশাপাশি নেতৃত্বের যোগ্যতা, সামাজিক বিভিন্ন কাজে সংশ্লিষ্টতা, পেশা ও গবেষণাক্ষেত্রে সংযুক্তিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়।
২০২৩-২৪ সেশনের চিভনিং বৃত্তির জন্য আবেদনপত্র গ্রহণ করা হচ্ছে। বিস্তারিত: www.chevening.org/scholarship/bangladesh/
৪. আইইএলটিএস স্কোর কতটুকু গুরুত্বপূর্ণ?
ভর্তির প্রতিযোগিতায় টিকতে আইইএলটিএস একটা গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা। নির্দিষ্ট স্কোর অর্জন করার মাধ্যমে ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করতে হয়। তবে এই স্কোর বৃত্তিতে ভূমিকা রাখে না। অধিকাংশ বৃত্তির আবেদন আইইএলটিএসের স্কোর ছাড়াই করা যাচ্ছে। তবে, আইইএলটিএস স্কোরকে হালকাভাবে নেওয়ার সুযোগ নেই। ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য ৬.০ থেকে ৭.৫ স্কোর প্রয়োজন হয়।
৫. পড়াশোনার ধরন কেমন?
শুভাশীষ রায় বলেন, যুক্তরাজ্যে পড়াশোনার ধরনে ব্যবহারিক প্রয়োগ বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। বাস্তব জীবনের নানা সমস্যা ও পরিস্থিতি, গ্রুপওয়ার্ক, ওয়ার্ক সিমুলশনের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ কর্মক্ষেত্রের জন্য প্রস্তুত করা হয়। ড. নিয়াজ চৌধুরী বলেন, মধ্যম মানের বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন বেশ ভালো করছে। ডিগ্রি অর্জনের পর শিক্ষার্থীদের ক্যারিয়ারের ক্ষেত্রে নানা মাত্রায় সহযোগিতা করছে তাঁরা। ইউরোপের অন্য দেশের চেয়ে যুক্তরাজ্যের পড়াশোনার কাঠামো আন্তর্জাতিক মানের ও আধুনিক। ইউনিভার্সিটি অব দ্য ওয়েস্ট অব স্কটল্যান্ড থেকে ডক্টরেট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ডিগ্রিধারী ড. সাদিয়া টুম্পা জানান, পড়ার সুযোগ অন্যান্য ইউরোপের দেশের চেয়ে যুক্তরাজ্যে বেশি। গবেষণার সুযোগ বেশি।
৬. জীবনযাত্রার মান ও খরচ কেমন?
বিশ্ববিদ্যালয়ভেদে খরচ ভিন্ন। তবে জীবনযাত্রার মান যুক্তরাজ্যের সব জায়গায় প্রায় একই রকম বলা যেতে পারে । লন্ডনের সঙ্গে বামিংহাম, ম্যানচেস্টারে একই ধরনের বাড়ির ভাড়ার পার্থক্যটা চোখে পড়ার মতো। সুযোগ-সুবিধার পার্থক্য খুব বেশি নেই। লন্ডনে চাকরির সুযোগ বেশি, কিন্তু চাকরির অবেদনকারীর সংখ্যাও অনেক বেশি। এছাড়া লন্ডনে প্রতি নিয়ত চাকুরী বদল করার সুযোগ রয়েছে, যা অন্য শহরে কষ্টকর বলা যেতে পারে । তবে ব্রেক্সিট এবং কোভিডের পরবর্তীতে বিট্রেনের জীবন যাত্রার খরচ অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে । যা অনেক শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা চালিয়ে যেতে একটু কষ্টকর হয়ে উঠছে । ম্যানচেস্টার, লিডস, পোর্সমাউথ , কার্ডিফ, লিভারপুল বা শেফিল্ডে খরচ কম, কিন্তু বেতন কাঠামো একই।
৭. পড়ালেখার পাশাপাশি কাজ করার সুযোগ আছে?
যুক্তরাজ্যে একজন শিক্ষার্থী পড়ালেখার পাশাপাশি সপ্তাহে ২০ ঘণ্টা কাজ করার অনুমতি পাচ্ছেন। সরাসরি ব্যবসা, ফ্রিল্যান্সিং করার ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আছে। তবে শিক্ষার্থীর ডিপেন্ডেন্ট যেকোন ব্যবসা এবং ফুল টাইম কাজ করতে পারবে । অধিকাংশ শিক্ষার্থীরা ফুড স্টো, সুপার স্টাের, হসপিটালিটি , ফুড ডেলিভারী , রিটেইল সেক্টরে কাজ করে থাকে ।
৮. পড়ালেখা করে যুক্তরাজ্যে চাকরির সুযোগ কেমন?
ইউরোপের একটি উন্নত দেশ হিসেবে পড়াশোনার পর আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের গবেষণার যেমন সুযোগ থাকে, তেমনি চাকরির অনেক সুযোগ আছে। মেধাবী শিক্ষার্থীদের যুক্তরাজ্যের বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানে কাজের সুযোগ আছে। অনেক শিক্ষার্থীই এখানে উচ্চশিক্ষা শেষ করে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ যেমন ফ্রান্স, স্পেনে চাকরির সুযোগ পায়। ব্রেক্সিটের পরে যুক্তরাজ্যে কাজের সুযোগ বাড়ছে।
যুক্তরাজ্যে উচ্চশিক্ষা: Chevening Masters Scholarship
যুক্তরাজ্যে পড়ার ক্ষেত্রে জনপ্রিয় একটি স্কলারশিপ হলো ব্রিটিশ চেভেনিং বা শেভেনিং স্কলারশিপ। এই স্কলারশিপ যুক্তরাজ্যে মাস্টার্স ডিগ্রি-প্রত্যাশীদের দেওয়া হয়ে থাকে। যুক্তরাজ্যে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে মাস্টার্স ডিগ্রি নিয়ে পড়তে ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের জন্য শেভেনিং স্কলারশিপ আবেদন গ্রহণ করা শুরু করেছে। এ স্কলারশিপের অফিশিয়াল নাম শেভেনিং মাস্টার্স স্কলারশিপ, যা ১৯৮৩ সাল থেকে ফরেন অ্যান্ড কমনওয়েলথ অফিসের অর্থায়নে যাত্রা শুরু করে। প্রতিবছর প্রায় ১ হাজার ৫০০ শিক্ষার্থীকে এই স্কলারশিপের আওতায় যুক্তরাজ্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনের সুযোগ দেওয়া হয়। বিশ্বের ১৪৪টি দেশের মেধাবী শিক্ষার্থীরা এই স্কলারশিপ প্রোগ্রামের জন্য আবেদন করতে পারেন।
আবেদনের যোগ্যতা
- আবেদনকারীকে শেভেনিং স্কলারশিপের আওতাভুক্ত দেশের নাগরিক হতে হবে।
- বৃত্তির মাধ্যমে পড়াশোনা শেষ করে দেশে ফিরে শিক্ষার্থীদের দুই বছর কাজের প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে হবে।
- নিজ দেশে স্নাতক ডিগ্রি-সম্পন্ন হতে হবে।
- অন্তত দুই বছর (২ হাজার ৮০০ ঘণ্টা) কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
- যাঁরা স্কলারশিপ পাবেন, তাঁদের ২০২৩ সালের ১৩ জুলাইয়ের মধ্যে যুক্তরাজ্যের তিনটি ভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে কোর্সের জন্য আবেদন করতে হবে।
- ব্রিটিশ বা দৈত ব্রিটিশ নাগরিক হলে আবেদন করা যাবে না।
- যুক্তরাজ্য সরকারের অর্থায়নে আগে সেখানে পড়াশোনা করলে আবেদন করা যাবে না।
সুযোগ-সুবিধা
শেভেনিং স্কলারশিপ একটি ফুল ফান্ডেড স্কলারশিপ।
- বিশ্ববিদ্যালয়ের টিউশন ফি।
- মাসিক বৃত্তি।
- দেশ থেকে যুক্তরাজ্যে যাওয়া-আসার ভ্রমণ ব্যয়।
- যুক্তরাজ্যে পৌঁছানোর পর ভাতা।
- ভিসা আবেদনের ফি।
- যুক্তরাজ্যে শেভেনিংয়ের বিভিন্ন ইভেন্টে অংশ নেওয়ার জন্য ভ্রমণ ভাতা।
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
- প্রার্থীদের শিক্ষাগত যোগ্যতার সব সনদ রেফারেন্স লেটার।
- ইংরেজি ভাষায় দুটি রেফারেন্স লেটার বা সুপারিশপত্র।
- পাসপোর্ট বা জাতীয় পরিচয়পত্র।
- সর্বশেষ পড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদ।
- যুক্তরাজ্যের অন্তত একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শর্তহীন অফার লেটার অনলাইনে সাবমিট করতে হবে।
আবেদনের নিয়ম
- যুক্তরাজ্য সরকারের শেভেনিং বৃত্তির জন্য অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে।
- বৃত্তির জন্য নির্বাচিত হওয়ার পর যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে ভর্তির ‘অফার লেটার’ সংযুক্ত করতে হবে।
- প্রাথমিকভাবে নির্বাচনের পর মৌখিক পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হবে ঢাকার ব্রিটিশ হাইকমিশনে।
এই ওয়েবসাইটেে দেখুন : chevening.org/scholarship/bangladesh/